শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, কক্সবাজার
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এর প্রভাব এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন ছয়জন রোগী। স্থানীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহ ধরে এলাকায় ডেঙ্গুর বিস্তার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ইতিমধ্যে ছয়জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশেষ করে বৃষ্টিপাতের পর নালা-নর্দমা এবং জমে থাকা পানিতে মশার বংশবিস্তার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এসব এলাকায় পানি জমে থাকা এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাড়িঘরের আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং মশার ওষুধের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণেও এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসান মাহমুদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সকলকে নিজ নিজ বাড়ি এবং আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং জমে থাকা পানি দ্রুত সরাতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে উখিয়া অঞ্চলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ফগিং, মশার লার্ভা ধ্বংস করার কার্যক্রম এবং জনসাধারণের মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো মিলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় একযোগে কাজ করছে। আক্রান্ত রোগীদের যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসা প্রদান এবং জ্বর, মাথাব্যথা বা শরীরে ব্যথা অনুভব করলে অবিলম্বে হাসপাতালে আসার জন্য সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডেঙ্গু মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞরা জানান, ঘরে এবং বাইরে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মশারি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া, পানি জমে থাকা স্থানগুলো দ্রুত পরিষ্কার করা, ফুলের টবে বা অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
Leave a Reply