পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিনকে তার গ্রামের বাড়িতে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনার সময় এলাকাবাসীর প্রতিবাদে তোপের মুখে পড়ে বিজিবি সদস্যরা। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় বিজিবির সদস্যদের আটকে রাখে এলাকাবাসীরা। চেয়ারম্যানের সমর্থকরা ঢাকা বাংলাবান্ধা মহাসড়কে যান চলাচলও বন্ধ করে দেয়। কয়েক ঘন্টা আটকে রাখার পর বিজিবি ১৮ ব্যাটলিয়নের সিইও, তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় বিকেলে বিজিবি সদস্যদের ছেড়ে এলাকাবাসীর।বিজিবি জানায় অস্ত্র ও ফেন্সিডিল আছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে অভিযানে পরিচালনা করে বিজিবি। অভিযানে তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এসময় এলাকাবাসীরা বিজিবির রাস্তায় ব্যারিকেট দেয়। বিজিবি সদস্যদের আটকে দেয়। তবে এলাকাবাসীরা বলছেন শুক্রবার সকালে বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে বিজিবির কিছু সদস্য সীমান্তবর্তি ভাঙ্গীপাড়া গ্রামে চেয়ারম্যানের বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে বিজিবি। পরে ১০৭ বোতল ফেন্সিডিল ও বাড়ির সদস্যদের মোবাইল ফোন জব্দ করে বিজিবি। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে চেয়ারম্যানের হাজার হাজার সমর্থক এসে বিজিবির সদস্যদেরকে আটকে দেন। এলাকাবাসীদের অভিযোগ চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন ফেন্সিডিল তো দুরের কথা পান বিড়ি সিগারেটও কিছু খাননা। তিনটি ভারতীয় গরু আটকের পর চেয়ারম্যানের সাথে বিজিবির কয়েক দিন থেকে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। এই ঘটনার জের ধরে বিজিবি উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তাকে গ্রেপ্তার করতে আসে। গ্রামবাসীরা এই সাজানো ঘটনাটি বুঝতে পারলে বিজিবির গাড়ি আটকে দেয়।
পুলিশের গাড়ি থেকে চেয়ারম্যানকে নামিয়ে নেয়ার পর বিজিবি সদস্যদেরকে আটক করে রাখে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিজিবি সদস্যদেরকে আটকে রাখা হয়। পরে ১৮ বিজিবির সিও ল্যা: কর্ণেল জিয়াউল হক ঘটানাস্থলে আসেন। তিনি স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি, তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রবীর কুমার রায়, উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক শাহদৎ হোসেন রঞ্জু, সদস্য সচিব রেজাউল করিম শাহীন উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় বিজিবির সিও এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন ঘটনা একটা ঘটতেই পারে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। পরে আটকে থাকা বিজিবি সদস্যদেরকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন জানান, গত তিন দিন আগে আমার পরিষদের কয়েকজন সদস্য তিনটি ভারতীয় গরু আটক করে। ভূতিপুকুর সীমান্তফাঁরীর বিজিবি সদস্যরা গরু তিনটিকে চাইলে আমরা সেগুলো খোয়ারে দেই। যেহেতু সেগুলো জন প্রতিনিধিরা আটক করেছে তাই গরুগুলোর মালিক বের হয় কিনা জানার জন্য কয়েকদিন খোয়ারে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ নিয়ে বিজিবির ১৮ বিজিবির সহকারি পরিচালক জামালউদ্দিনের সাথে কথা
কাটাকাটি হয়। তাদের সঙ্গে আমার দুরত্ব তৈরী হয়।
শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে হঠাৎ কিছু বিজিবি সদস্য আমার বাড়ি ঘেরাও করে । এরপর বিজিবি সদস্যরা বাড়ি থালি করতে বলে । সবাইকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে । প্রায় ১৫ মিনিট পর আমাকে ডেকে আমার ঘরে প্রবেশ করে আমাকে বলে যে আপনার ঘরে ফেন্সিডিল আছে । পরে একটি বস্তা দেখিয়ে বলে যে এই বস্তায় ফেন্সিডিল আছে। পরে আমাকে বিজিবির গাড়িতে উঠতে বলে। আমি তখন পুলিশের গাড়িতে উঠতে চাই। এসময় শত শত গ্রামবাসী এসে আমাকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে ১৮ বিজিবির সহকারি পরিচালক জামালউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৮ বিজিবির টু আই সি মেজর রিয়াদ মোর্শেদ সহ বিজিবির সদস্যরা চেয়ারমাানের বাড়িতে অভিযান চালায়। আমার সঙ্গে চেয়ারম্যানের সম্পকের্র টানাপোরেন নেই। গরু নিয়ে বিজিবির সাথে কোন ঘটনা নেই। চেয়ারম্যানের বাড়িতে ১০৭ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া গেছে। বিজিবির সিও বলেন অস্ত্র ও ফেন্সিডিল আছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার জন্য আমাদের সদস্যরা চেয়ারম্যানের বাড়িতে যায়। চেয়ারম্যানকে আটক করলে স্থানীয় গ্রামবাসী ব্যারিকেট দেয়। যেহেতু পাবলিক সেন্টিমেন্ট তার পক্ষে তাই আমরা মামলা করছিনা। জব্দকৃত ফেন্সিডিলগুলো থানায় জমা দেয়া হবে।
Leave a Reply