শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, কক্সবাজার
পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল, ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)-এর পবিত্র দিনে উখিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো এক মনোমুগ্ধকর ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ইবনে আব্বাস (রাঃ) একাডেমী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসাহ-উদ্দীপনার এক অনন্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ইসলামী সংস্কৃতির প্রসার ও শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা উখিয়া অঞ্চলে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনাদর্শ ও তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ইসলামী সংগীত। ইসলামি সংস্কৃতির প্রচার এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ধর্মীয় আদর্শের বীজ বপনের লক্ষ্যে ইবনে আব্বাস (রাঃ) একাডেমী প্রতিবারের মতো এ বছরও ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)-এর দিনে এই বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিযোগিতাটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়, যা স্থানীয়দের মধ্যেও ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
এই ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতায় প্লে-গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইসলামি সংগীতের মাধ্যমে মহানবী (সাঃ)-এর প্রতি তাঁদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে। বিচারকদের কঠোর মূল্যায়নে প্রতিটি বিভাগের শীর্ষস্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়:
প্লে-গ্রুপ:-১ম স্থান: আবিরা,২য় স্থান: সাইফা,৩য় স্থান: আহনাফ। নার্সারি-গ্রুপ:-১ম স্থান: তিশান,২য় স্থান: তাসনিয়া,৩য় স্থান: হামদান। ১ম শ্রেণি:-১ম স্থান: আফরা,২য় স্থান: মাহাদী,৩য় স্থান: খাদিজা (১৯)।
২য় শ্রেণি:-১ম স্থান: সানিমা,২য় স্থান: মাহাদী,৩য় স্থান: রাইচা। ৩য় শ্রেণি:-১ম স্থান: মোহাম্মদ, ২য় স্থান: মাহমুদ, ৩য় স্থান: নাভা। ৪র্থ শ্রেণি:-১ম স্থান: মোবাশেরা,২য় স্থান: হাসিব,৩য় স্থান: তুরিন। ৫ম শ্রেণি:-১ম স্থান: মিশকাত, ২য় স্থান: ছমিরা, ৩য় স্থান: রাইমা।
প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেন, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাওলানা এহসান হাবিব, হাফেজ ইব্রাহিম, হাফেজ হুমায়ুন কবির, হাফেজ আজিজুর রহমান, তরুণ শিক্ষক মোঃ আবদুল্লাহ এবং মহিলা শিক্ষিকা খুরশিদা আক্তার। তাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা দেখে মুগ্ধ হন এবং তাঁদের প্রতিভা ও ধর্মীয় চেতনার প্রশংসা করেন। বিচারকদের মতে, এই প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রতিযোগিতার আয়োজক ও বিচারকরা জানান, এই ধরনের প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশের জন্যই নয়, বরং তাদের নৈতিকতা ও ধর্মীয় জ্ঞানের উন্নয়নেও বড় ভূমিকা পালন করে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেন বলেন, প্রতিবছর আমরা এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইসলামি মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি।” অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ছিল ব্যাপক উৎসাহ। অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানের সফল অংশগ্রহণে গর্বিত বোধ করেন এবং মাদ্রাসার এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানটির সমাপনী বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেন সকল অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং বিচারকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই প্রতিযোগিতা শুধু একটি আয়োজন নয়, এটি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে নৈতিক ও ধর্মীয় জ্ঞানের পথে অগ্রসর হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উখিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের মসজিদ কমিটি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং অনেক অভিভাবক।
Leave a Reply