,

নারায়ণ চন্দ্র পোদ্দারের বর্ণাঢ্য জীবন

 

জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হরিরামপুরের এক কৃতি সন্তান নারায়ণ চন্দ্র পোদ্দার। মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার বিখ্যাত ধনাঢ্য পরিবার ঝিটকা পোদ্দার বাড়িতে ১৯৫০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন মহেন্দ্র চন্দ্র পোদ্দার। তিনি বিখ্যাত পোদ্দার বাড়ির ৫ম বংশধর। ইছামতীর কোল ঘেঁষে বেড়ে ওঠা নারায়ণ চন্দ্র পোদ্দার ছোটবেলা থেকেই ছিলেন দুরন্ত, উদ্যমী, মেধাবী ও পরোপকারী। কথিত আছে তার দুয়ার থেকে কেউ কখনো খালি হাতে ফেরত যায়নি। তার জীবদ্দশায় তিনি সমাজ ও এলাকায় মানুষদের জন্য রেখে গেছেন অনবদ্য অবদান। জানা যায় উপজেলার ঝিটকা অঞ্চলে তিনি তার নিজের পৈতৃক সম্পত্তির উপর গড়ে তুলেছেন মহাশ্মশান ঘাট,এবং তার নিজ তুলেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে ঝিটকা পোদ্দার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তার সরকারি করন তিনি করে দিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন মহাশ্মশান ঘাটের সভাপতি ও সেক্রেটারি থেকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ঝিটকা বাজারের দূর্গা মন্দির স্থাপন ও ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে তার রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। তিনি দীর্ঘদিন দুর্গা মন্দিরের সভাপতি,সেক্রেটারি পদে থেকে মন্দিরের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি সর্বদাই এলাকার মানুষদের আর্থিক ও বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে গেছেন। তাকে অপছন্দ করেন এমন মানুষ ছিলোনা বললেই চলে। সর্বোপরি তিনি মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। কর্মজীবনে তিনি বি কম পাশ করে ঝিটকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। একাধারে তিনি ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক নম্বর সদস্য দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে গেছেন দীর্ঘদিন। পরোপকারী ও মহৎপ্রাণ এই মানুষটি ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মৃত্যুবরন করেন। তিনি চলে গেলেও রেখে গেছেন তার অবদান ও অসংখ্য গুণগ্রাহী। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের হরিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ঝিটকা বাজার মন্দির কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নরেশ চন্দ্র দাশ বলেন, প্রয়াত নারায়ণ চন্দ্র পোদ্দার ছিলেন আমাদের সকলের প্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং পছন্দের একজন মানুষ। তিনি তার প্রায় পুরোটা জীবন মানুষের কল্যানে কাজ করে গেছেন। তার কাছে কোন ধর্মীয় ভেদাভেদ ছিলোনা। তিনি সবাইকে সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করে গেছেন। তার কাছে এসে কেউ কখনো নিরাস হয়নি। ১৮ ডিসেম্বর তার প্রয়ান দিবসে মহৎপ্রাণ মানুষটির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। নারায়ণ চন্দ্র পোদ্দারের ছেলে বিপ্লব পোদ্দার বলেন, হরিরামপুরে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমার বাবা ছিলেন এক কথায় সবার নয়নমণি। তিনি কখনো কারো ক্ষতি করেন নি৷ তিনি সর্বদাই চেষ্টা করেছেন মানুষকে সহোযোগিতা করার, সমাজের মানুষের কল্যানে কাজ করার৷ তিনি ঝিটকা অঞ্চল তথা হরিরামপুর বাসীর জন্য রেখে গেছেন অনন্য অবদান৷ বাসুদেবপুর মহাশ্মশান তার একটা সুন্দর নিদর্শন,সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য, যার ফল হরিরামপুরের, মানুষ তার মৃত্যুর পরেও ভোগ করছেন৷ হরিরামপুরের ইতিহাসের পাতায় নিশ্চয়ই তার নাম বার বার স্বরিত হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category